• E-paper
  • English Version
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:১৫ পূর্বাহ্ন

×

স্বাস্থ্যকর নগরী গড়তে সবাইকে দ্বায়িত্বের সাথে কাজ করতে হবে : খুলনা সিটি মেয়র

  • প্রকাশিত সময় : বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ২৫৯ পড়েছেন

খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেছেন, খুলনা নগরীর স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়নে সিটি কর্পোরেশন আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। স্বাস্থ্যকর নগরী গড়তে সবাইকে দ্বায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করতে হবে। সিটি কর্পোরেশন ও নগরবাসীর সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া এ কাজ সম্ভব নয়।

তিনি বৃহস্পতিবার সকালে খুলনা নগর ভবনের শহীদ আলতাফ মিলনায়তনে নাগরিক ফোরামের আয়োজনে রূপান্তর ও দ্যা এশিয়া ফাউন্ডেশনের সহায়তায় “সুশাসন উন্নয়নে জনসম্পৃক্তকরণ” প্রকল্পের কেসিসি’র স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়ন বিষয়ক এক পরামর্শ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। নাগরিক ফোরাম, খুলনা মহানগরের সদস্য সচিব এ্যাড. সেলিনা আক্তার পিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেসিসি’র প্যানেল মেয়র মোঃ আমিনুল ইসলাম (মুন্না), মোঃ আলী আকবর টিপু এবং এ্যাড. মেমোরী সুফিয়া রহমান (শুনু), কেসিসি‘র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কর তাজুল ইসলাম ও রূপান্তরের নির্বাহী পরিচালক স্বপন কুমার গুহ। অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন কেসিসি’র কাউন্সিলর আশফাকুর রহমান কাকন, মাজেদা খাতুন, রেকসোনা কামাল লিলি, কেসিসি’র প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা স্বপন কুমার হালদার, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শরীফ সামিউল আলম, সাংবাদিক হাসান হিমালয়, খলিলুর রহমান সুমন, মো. শহীদুল হাসান প্রমূখ। সভায় স্বাগত বক্তৃতা করেন নাগরিক ফোরাম, খুলনা কেন্দ্রিয় আহবায়ক কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক হাসান হাফিজুর রহমান। নগরীতে স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে বক্তৃতা করেন সূর্যের হাসি ক্লিনিকসহ স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা এনজিওসমূহের প্রতিনিধিগণসহ নাগরিক নেতৃবৃন্দ। এসময়ে সভায় কাউন্সিলরবৃন্দ, কেসিসি’র কর্মকর্তাবৃন্দ, নাগরিক নেতা, সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সিটি মেয়র তার বক্তৃতায় আরো বলেন, খুলনা মহানগরীর মানুষের নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তরিক। খুলনা নগরীকে উন্নত, পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর নগরী হিসেবে গড়তে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগীতা আমরা পাচ্ছি। সে লক্ষে সবাইকে সর্বোচ্চ দায়িত্বশীলতার সাথে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দ্বায়িত্ব পালন করতে হবে।

সিটি মেয়র কেসিসি’র কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে আমাদের নাগরিকদের কাছে জবাবদিহিতা রয়েছে। সাধারণ নগরবাসীর সেবা দেওয়া আমাদের নৈতিক দ্বায়িত্ব। মহানগরীর মানুষের করের টাকায় আপনাদের বেতন হয়। তাদের দুর্ভোগ লাঘবে আপনাদের আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে হবে। তিনি কেসিসি‘র স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা প্রদান করেন এবং দ্বায়িত্ব পালনে কোন অবহেলা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারী প্রদান করেন।

তিনি আরো বলেন, সক্রিয় নাগরিক সম্পৃক্ততার মাধ্যমে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে কাজের স্বচ্ছতা, গতিশীলতা ও সংবেদনশীলতা জোরদার হয়। আর এ জন্যেই ব্যক্তিগতভাবে আমি আগেও নাগরিক ফোরামকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছি, ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে। এ আয়োজনের জন্য তিনি নাগরিক ফোরামকে ধন্যবাদ জানিয়ে এ ধরণের সভা নিয়মিত আয়োজনের আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কেসিসি’র স্বাস্থ্য সেবা বিষয়ে নাগরিক সন্তুষ্টি জরীপের ফলাফল উপস্থাপন করেন নাগরিক ফোরাম, খুলনা মহানগরের সদস্য সচিব এ্যাড. সেলিনা আক্তার পিয়া। এসময়ে তিনি জানান, নাগরিক ফোরাম কেসিসি‘র ৩১টি ওয়ার্ডের সর্বমোট ৩৭২ জন নাগরিকের মধ্যে এ সোস্যাল অডিট পরিচালনা করেন। স্বাস্থ্য সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট ১০টি বিষয়ের উপর এ জরিপ পরিচালিত হয়। কেসিসি পরিচালিত নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডের সক্রিয় ২৭টি ক্লিনিক ও ১টি নগর মাতৃসদন যার মধ্যে সূর্য্যরে হাসি ক্লিনিক ১৫টি, রংধনু ক্লিনিক ১২টি ও আমিরাবানু বেগম নগর মাতৃসদন ১টি এর দ্বারা স্বাস্থ্য সেবার উপর জরিপ পরিচালিত হয়। জরিপে ৩৭২ জন নাগরিকের মধ্যে ১০০ জন অর্থাৎ ২৭% মতামত দিয়েছেন তারা স্বাস্থ্য সেবায় সন্তুষ্ট এবং ২৭২ জন অর্থাৎ ৭৩% নাগরিক জানিয়েছে তারা স্বাস্থ্য সেবায় অসন্তুষ্ট। জরিপে সেবা গ্রহীতাদের বিভিন্ন অভিযোগ ও সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়। জরিপকালে সেবা গ্রহিতারা কেসিসি‘র স্বাস্থ্য সেবায় দক্ষ চিকিৎসকের অভাব, চিকিৎসা সেবা ব্যয় বহুল, লাল কার্ডধারীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার কথা থাকলেও সেবামূল্য আদায় করা হয়, চিকিৎসা সেবা প্রদানকারীরা সেবা প্রদানে আন্তরিক নন, স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহার রুক্ষ, বস্তিবাসীরা স্বাস্থ্যসেবা নিতে গেলে অবজ্ঞার শিকার হন, পুরুষ ও মহিলা সেবা গ্রহীতার জন্য আলাদা কোন ডাক্তার নেই, জরুরী রোগী দেখতে ডাক্তারদের মনযোগীতার অভাব, ওয়াশরুম প্রায়ই ব্যবহারের অনুপোযোগী থাকে, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীরা সেবা না দিয়ে ফোন নিয়েই ব্যস্ত থাকে, চাহিদার তুলনায় স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সংখ্যা কম, মাতৃসদনে কাউন্সিলর সেবামূল্য কম নেওয়ার সুপারিশ করলে সিজারিয়ান রুগীকে ৭দিনের পরিবর্তে ৪ দিন ক্লিনিকে রেখে বাড়ী পাঠিয়ে দেওয়া হয় এবং বেশিরভাগ ওষুধই পাওয়া যান না বলে অভিযোগ করেন।

সভায় নাগরিক ফোরামের নেতৃবৃন্দ স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে নাগরিকদের বিভিন্ন ভোগান্তির বিষয় তুলে ধরেন এবং বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পৃথিবীর পাঁচটি নগরীকে “স্বাস্থ্যকর নগরী” হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে। তার একটি হচ্ছে খুলনা। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় খুলনা ছাড়া আর কোন নগরী এই তালিকায় স্থান পায়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই উদ্যোগ সফল করে তুলতে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA